ঢাকা,সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪

রামুতে শাশুড় বাড়িতে জামাই হত্যা, ১০ দিনেও ধরা পড়েনি জড়িতরা (ফলোআপ)

রামু প্রতিনিধি ::
রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের চেইন্দা লারপাড়া এলাকায় শাশুড় বাড়িতে যুবক দিদারুল আলম হত্যার ঘটনায় ১০ দিনেও আটক হয়নি অভিযুক্তরা। উল্টো জড়িতরা হত্যাকান্ড ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের স্বজনরা।

কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের শহর আলীর ছেলে দিদারুল আলম (৩২) কে দুদফা মারধর ও মুখে বিষ ঢেলে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মারা যান তিনি।

এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো. ইকবাল বাদী হয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর রামু থানায় ৮জনকে অভিযুক্ত করে হত্যা মামলা (নং ২৮) দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, একই এলাকার হাবিব উল্লাহর ছেলে মো. রায়হান, মেয়ে কানিজ ফাতেমা (নিহত দিদারের স্ত্রী), মৃত আবুল কাশেমের ছেলে হাবিব উল্লাহ, আবদুল গফুর ও আবদুল হাকিম, হাবিব উল্লাহর ছেলে মো. বাপ্পি, স্ত্রী সালমা খাতুন, অজ্ঞাতনামা নজির আহমদ। এরা সবাই রামুর উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের চেইন্দা লারপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, দিদারুল আলম ৯ বছর পূর্বে রামুর দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের ঘোনারপাড়া লারপাড়া এলাকার হাবিব উল্লাহর মেয়ে কানিজ ফাতেমাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তাদের সংসারে ১ ছেলে, ১ মেয়ে জন্মগ্রহন করে। বিগত কয়েকবছর ধরে ব্যবসায়িক কারণে দিদারুল আলম শাশুড় বাড়িতে বসবাস করে আসছে। ওই এলাকার দিদারুল আলমের মুদির দোকান ছাড়াও ২টি সিনজি চালিত অটোরিক্সা ও ইজিবাইক (টমটম) গাড়ি রয়েছে। এসব সম্পদের লোভে স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, শাশুড়, শ্যালক ও চাচা শাশুড়েরা প্রায় সময় দিদারুল আলমকে মারধর করতো।

মামলার এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৬ ও ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে দিদারুল আলমকে দুদফা পিটিয়ে গুরতর আহত করে মামলায় অভিযুক্তরা। মারধরের পর উল্টো দিদারুল আলমের মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজানোর চেষ্টা চালায় হামলাকারিরা। মূমূর্ষু অবস্থায় তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ১৯ সেপ্টেম্বর রাত ১২টায় মারা যান দিদারুল আলম। নিহত দিদারুল আলমের পিঠ, হাত, কোমর সহ বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

মামলার বাদি মো. ইকবাল জানান, হত্যাকান্ডে জড়িতরা এলাকার প্রভাবশালী এবং সন্ত্রাসী প্রকৃতির। ভাইকে হত্যার অভিযোগে মামলার করার পর থেকে আসামীরা তাকে এবং পরিবারের সদস্যদের বিভিন্নভাবে হুমকী-ধমকি দিচ্ছে। পুলিশ তাদের কিছুই করবে না, মোটা অংকের অর্থ দিয়ে ভিসেরা ও ময়না তদন্তের মিথ্যা রিপোর্ট আনবে, এমনকি যত টাকা লাগুক, এ মামলা তারা চলতে দেবে না বলেও এলাকায় বলে বেড়াচ্ছে তারা।

পরিবারের সদস্যরা জানান, পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে দিদারুল আলমকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের ১০ দিনেও অভিযুক্ত কাউকে আটক না করায় তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। এ কারণে আসামীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় প্রতিনিয়ত নানাভাবে তাদের হুমকী-ধমকি দেয়ার সাহস পাচ্ছে। দিদারুল আলমের স্বজনরা এ হত্যাকান্ডে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতারের জন্য কক্সবাজার জেলার নবাগত পুলিশ সুপার এর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবুল খায়ের জানিয়েছেন, এ ঘটনায় ৮ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে। তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। কোনভাবেই তাদের ছাড় দেয়া হবে না।

পাঠকের মতামত: